জাকির সিকদার : ঢাকার আশুলিয়ার বারইপাড়া নন্দন পার্কের সামনে পুলিশ চেকপোষ্টে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত পুলিশ কনস্টেবল মকুলের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের আহাজারী ও কান্নার রোল ।নিহতের বাড়ী
বগুড়া শহর থেকে ৩০ কি,মি উত্তর পূর্বে শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলি ইউপির রহবল পুর্ব পাড়ার গ্রামে । নিহত পুলিশ কনস্টেবল মকুলের বাড়ীতে এখন শুধুই আহাজারী ও কান্নার রোল। পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজন কেউই থামাতে পারছেনা নিহত মুকুলের বাবা শহীদুল (৫২) ও মা মোর্শেদার কান্না।
বুধবার দুপুরে সাংবাদিকরা মুকুলের বাড়ীতে উপস্থিত হলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয় । নিহত মুকুলের মা মোর্শেদা ছেলের একটি ছবি হাতে নিয়ে কেবলই আহাজারী করছে । মুকুলের বাবা শুধু বলছে , ‘‘হায় আল্লাহ.. এখন কী হবি (হবে) .. কী হবি (হবে ) হামার ( আমার) সংসারের ।”
পাড়া প্রতিবেশীরা জানায় .“‘মুকুল খুব ভাল ছেলে হিসাবে এলাকায় পরিচিত ছিল । সব কিছুতেই দায়িত্বশীল ছিল সে। সংসারের দৈন্যদশা ও ছোট ৩ ভাইবোনের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে ৪ বছর আগে ২০১২ইং সালে সে বাবার ৪ বিঘা জমি বন্ধক রেখে পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল পদে যোগ দেয় ।
মুকুল সব সময়েই সে তার ছোট ভাই কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া জিসান, স্থানীয় হাইস্কুলে পড়া বোন নবম শ্রেণির ছাত্রী সম্পা ও ৫ম শ্রেণিতে পড়া মিষ্টি খাতুন কে পড়া শোনায় সব সময় উৎসাহ দিতো।
সেই মুকুলের এই অকাল মৃত্যুর সংবাদ পুরো পরিবারকে ঠেলে দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তায়। ছোট ভাই জিসান জানান,‘ঢাকায় পোষ্টিং হবার পর থেকেই নিয়মিত মোবাইল ফোনে বাড়ীর সবার সাথে যোগাযোগ রাখতো । বুধবার সকালে ঢাকা থেকে তার নম্বরে একটি ফোন আসে, আর সেই ফোন কলেই মর্মান্তিক খবরটি জানতে পায় সে। এমন খবরে তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে-পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যেতে থাকে । সে বুঝতে পারে তাদের সবকিছু ওলট পালট হয়ে গেছে ।’
জিসান প্রথমে ফোন কলে পাওয়া মুকুলের মৃত্যৃ সংবাদটি বিশ্বাস না করলেও কিছুক্ষণের মধ্যে টেলিভিশনে এ সংক্রান্ত খবর ফলাও করে প্রচার শুরু হলে সব কিছুই তাদের পরিবার ও প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় ।
এদিকে পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ মুকুলের পরিবারকে শান্তনা দিয়ে সব ধরনের সহয়োগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দুপুরের পর নিহত মুকুলের বাড়ীতে ছুটে যান স্থানীয় সংসদ সদস্য শরিফুল ইসলাম জিন্নাসহ জেলা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা।
ঢাকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে মুকুলের লাশ বুধবার রাতে তার গ্রামের বাড়ীতে পাঠানোর কথা রয়েছে।